নিজস্ব প্রতিবেদন, তমলুক: বিগত কয়েকমাস ধরে বন্ধ থাকা লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, এবং এর মধ্যে তাম্রলিপ্ত পৌরসভার প্রায় ৩৫০ জন মহিলার পাওনা অর্থ আটকে রয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ মূলত মহিলাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে চালু হয়েছিল। প্রথমে মাসিক ৫০০ টাকা দেওয়া হলেও পরবর্তীতে এটি বাড়িয়ে ১০০০ টাকা করা হয়। তবে, তাম্রলিপ্ত পৌরসভার এই ৩৫০ মহিলা প্রায় ৬-৭ মাস ধরে তাদের টাকা পাচ্ছেন না, যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রাপক মহিলা পুতুল সিংহ বলেন, “৬-৭ মাস ধরে টাকা পাচ্ছি না। পৌরসভায় জানিয়েও কোন সঠিক উত্তর পাচ্ছি না। পুনরায় ফর্ম ফিলাপ করে জমা দিয়েও টাকা পাচ্ছি না। অনলাইনে চেক করলে মিসম্যাচ লেখা আসে। আমরা চাই দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হোক।” অন্য এক প্রাপক স্বর্ণলতা বেরা বলেন, “এটি আমাদের অনেক কাজে লাগে, কিন্তু আমাদের টাকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক সমস্যা হচ্ছে। পুনরায় ফর্ম ফিলাপ করেছি, কিন্তু এখনও কিছু হয়নি।”
এই পরিস্থিতির মধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতোর। তাম্রলিপ্ত পৌরসভার ভারতীয় জনতা পার্টির নগর মন্ডলের সভাপতি সুকান্ত চৌধুরী বলেন, “লোকসভা ভোটের আগে আমরা বলেছিলাম, শাসক শিবির এই ভাতা দেওয়ার নাম করে ভোট চাইছেন, কিন্তু বাস্তবে মানুষ টাকা পাচ্ছেন না। পশ্চিমবঙ্গ সরকার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চাইছে।”
তবে, শাসকশিবির এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাম্রলিপ্ত পৌরসভার চেয়ারম্যান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। কিছু কিছু জায়গায় কেওয়াইসি আপডেট হয়নি, কিন্তু প্রশাসনিক ভাবে বিষয়টি শট আউট করা হয়েছে। আশা করছি, ডিসেম্বর থেকে মহিলারা তাদের লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা পাবেন।”
এই পরিস্থিতি রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে, এবং তাম্রলিপ্ত পৌরসভার ৩৫০ জন মহিলা এরই মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে, তবে কি কারণে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তা এখনো পুরোপুরি পরিষ্কার হয়নি।
এখন প্রশ্ন উঠছে, এই সমস্যার সমাধান কবে হবে এবং কেন কিছু মহিলা লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা পাচ্ছেন না। সকলের নজর থাকবে ডিসেম্বর পর্যন্ত, যেখানে প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে এই টাকা অবিলম্বে প্রদান করা হবে।