তমলুক: কয়েক কোটি টাকার প্রাসাদতুল্য তিনতলা বাড়ি থাকার পরও তমলুকের গণপতি নগরের পান ব্যবসায়ী অভিজিৎ মন্ডলের নাম ছিল আবাস যোজনার তালিকায়। বিষয়টি নিয়ে সুপার চেকিংয়ে চমকে যান জেলাশাসক। বাড়িটি দেখার পর তমলুকের বিডিওকে ওই উপভোক্তার নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। তমলুকের জেলাশাসক কার্যালয় থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে অবস্থিত এই বাড়ির মালিক অভিজিৎ মন্ডল, যিনি পেশায় পানের আড়ৎদার। ২০১৮ সালে সার্ভে করার সময় তার নাম আবাস যোজনার প্রায়োরিটি তালিকায় যোগ হয়।
অভিজিৎ মন্ডলের স্ত্রী এবং পুত্রবধূ জানান, ২০১৮ সালে তাদের আর্থিক অবস্থা এখনকার মতো ছিল না। তারা কুড়েঘরে থাকতেন, তাই আবাস যোজনার জন্য আবেদন করেছিলেন। পরে তাদের আর্থিক উন্নতি হয় এবং তারা নিজস্ব পাকা বাড়ি তৈরি করেন। বাড়ি নির্মাণের পর পঞ্চায়েত কর্মীদের জানানো হয়েছিল যে তাদের আর বাড়ির প্রয়োজন নেই।
এ ঘটনাযর পর থেকে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। তৃণমূলের তমলুক সংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মাইতির দাবি, অভিজিৎ মন্ডল তৃণমূলের কর্মী, কিন্তু বর্তমানে উত্তর সোনামুই গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপির দখলে। তিনি অভিযোগ করেন, পঞ্চায়েত কর্মীরা ইচ্ছাকৃতভাবে তার নাম তালিকা থেকে বাদ দেননি, যাতে তৃণমূলকে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রমাণ করা যায়।
অপরদিকে, বিজেপি অভিযোগ তুলেছে, কাটমানির ভিত্তিতে আবাস যোজনার ঘর বিতরণ করা হচ্ছে। বাড়ি কত বড় বা কী অবস্থায় তা বিবেচনা না করে, কুড়ি হাজার ত্রিশ হাজার টাকার বিনিময়ে ঘর পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে যারা বেশি টাকা দেবে তাদের তালিকায় অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। বিজেপির দাবি, এটি তৃণমূলের দুর্নীতির আরেকটি উদাহরণ।
অন্যদিকে জেলাশাসক বিষয়টি নিয়ে কড়া মনোভাব গ্রহণ করেছেন। তিনি বিডিওকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে এবং এমন অনিয়মের বিরুদ্ধে কড়া নজরদারি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এই ঘটনা একদিকে সরকারি প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, অন্যদিকে তৃণমূল ও বিজেপির রাজনৈতিক সংঘর্ষের ইন্ধন জুগিয়েছে। প্রশাসন কীভাবে এই ঘটনার সঠিক সমাধান করে, তা দেখার বিষয়।