পূর্ব মেদিনীপুর: ব্যক্তিগত জমিতে কালভার্ট নির্মাণ নিয়ে আইনের দ্বারস্থ হওয়ায় চরম বিপাকে পূর্ব মেদিনীপুরের চন্ডিপুর থানার ধান্যশ্রী মৌজার বাসিন্দা শ্রীনিবাস সাউ। তাঁর অভিযোগ, শাসক দলের প্রভাবিত গ্রাম কমিটির রোষানলে পড়ে গত দুই বছর ধরে তাঁর চাষ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, সামাজিকভাবে বয়কটের পাশাপাশি প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
কী নিয়ে সংঘাত?
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ধান্যশ্রী মৌজার একটি খাল সংলগ্ন জমির মালিক শ্রীনিবাস সাউ। অভিযোগ, ওই জমির উপর জোর করে সরকারি কালভার্ট নির্মাণ করতে গেলে তিনি আপত্তি জানান এবং আদালতের দ্বারস্থ হন। এরপরই গ্রাম কমিটির নেতৃত্বে তাঁর জমিতে চাষাবাদ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
শ্রীনিবাস সাউয়ের অভিযোগ, শুধু চাষ বন্ধ করাই নয়, মাঠে লাঙল চালাতে গেলে পাওয়ারটিলার চালককে বাধা দেওয়া হয়েছে। এমনকি প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। পরিবার সূত্রে আরও অভিযোগ, পানীয় জলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সুবিধা থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে তাঁদের। গ্রামে সামাজিক অনুষ্ঠানে তাঁদের ডাকা হচ্ছে না, বয়কট করা হয়েছে তাঁদের পরিবারকে।
প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও মিলছে না সুরাহা
শাসক দলের দাপুটে নেতাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানালেও পুলিশ এফআইআর নিতে অস্বীকার করেছে বলে দাবি করেছেন শ্রীনিবাস। এরপর তিনি স্থানীয় বিডিও, বিএলআরও, পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা শাসক এবং পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হন। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তাঁর।
কারা জড়িত?
এই ঘটনার জন্য সরাসরি চন্ডিপুর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধক্ষ দিব্যেন্দু ভক্তা, গ্রাম কমিটির সেক্রেটারি শচীন মাইতি সহ একাধিক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযুক্তরা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের দাবি, “ওরা বিজেপি করে, তাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মিথ্যা অভিযোগ করছে।”
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
চন্ডিপুর ব্লকের বিডিও জানিয়েছেন, তাঁর সময়কালে এ ধরনের কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে লিখিত অভিযোগ এলে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে
একের পর এক প্রশাসনিক দপ্তরে দরবার করেও সুবিচার না পাওয়ায় প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের তরফে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে রাজনৈতিক মহলে বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়েছে।
শ্রীনিবাস সাউ ও তাঁর পরিবার প্রশাসনের আশ্বাসের অপেক্ষায় রয়েছেন। এখন দেখার, তাঁদের ন্যায়বিচার মিলবে কিনা!