অমিত খিলাড়ি, ডেবরা: উড়ালপুলের স্বপ্ন দেখতে গিয়ে বাস্তবের মাটিতে ভেঙে পড়েছে কিসমত ডুঁয়া গ্রামের মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা। রেলগেট বন্ধ, আর তার বিকল্প যে রাস্তা—তা কার্যত মৃত্যু ফাঁদ! বেহাল রাস্তার প্রতিবাদে এদিন সকাল থেকেই পথ অবরোধে ফেটে পড়লেন এলাকার শতাধিক বাসিন্দা।
বালিচক উড়ালপুল তৈরির জন্য বহুদিন ধরেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রেলগেটের পথ। বাধ্য হয়ে মানুষ ব্যবহার করছেন পাশের একটি পুরনো বিকল্প রাস্তা। কিন্তু সেই রাস্তায় জায়গায় জায়গায় ভয়াবহ গর্ত, নেই নিকাশি, আর বর্ষায় কাদায় পিচ্ছিল হয়ে ওঠা সেই রাস্তায় প্রতিদিন চলছে চরম দুর্ভোগ।
এই অবস্থায় বারবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও ফল না মেলায় এদিন রীতিমতো রাস্তায় নেমে এলেন সাধারণ মানুষ। সিপিএম-এর নেতৃত্বে আয়োজিত এই বিক্ষোভে স্থানীয় যুবক-যুবতী থেকে প্রবীণ নাগরিক—উপস্থিত ছিলেন সকলে। রাস্তার উপর ব্যানার হাতে বসে পড়েন তাঁরা।
এক আন্দোলনকারী মহিলা বললেন, “আমাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতে পারে না, বয়স্করা হাসপাতালে পৌঁছাতে পারে না। কতবার লিখেছি, বলেছি! কিন্তু কেউ শোনেনি। আজ আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি।”

অন্য এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, “রেলগেট বন্ধ, আর যে রাস্তা আছে সেটাও এমন দশায় যে, বাইক চালাতে ভয় লাগে। কতবার দুর্ঘটনা হয়েছে, কেউ দেখে না। আমরা উন্নয়ন চাই, কিন্তু সেটা যেন শুধু কাগজে না থাকে!”
বিক্ষোভস্থলে উপস্থিত ছিল ডেবরা থানার পুলিশও। শান্তিপূর্ণ ভাবেই চলে পথ অবরোধ। অবরোধ প্রত্যাহারের একটাই শর্ত—উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক আধিকারিক এসে যেন সমস্যার স্থায়ী সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন।
এদিকে ঘটনার গুরুত্ব বুঝে তৎপর হয়েছে প্রশাসনও। ব্লক স্তরের এক আধিকারিক জানান, “এই সমস্যার কথা আমাদের জানা আছে। জরুরি ভিত্তিতে রাস্তা সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।”
কিসমত ডুঁয়ার মানুষ আজ একটাই প্রশ্ন করছেন—উড়ালপুল কবে হবে জানি না, কিন্তু ততদিন কী আমরা গর্তে পড়েই চলব?