বাঁকুড়া: বাঙালির জীবনে পূজা পার্বণের কোনো শেষ নেই। দুর্গা পুজো, কালী পুজো, ভাইফোঁটার পর বাঙালিরা অপেক্ষায় থাকে আরও একটি বড় উৎসবের—জগদ্ধাত্রী পূজার। দেবী জগদ্ধাত্রীকে জগতের পালিকা শক্তি হিসেবে মান্য করা হয়। দেবী চার হাতে সজ্জিত, যাকে বলে “চতুর্ভূজা,” এবং তিনি শক্তির প্রতীক। এই ঐতিহ্যবাহী উৎসবটি বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস ব্লকের আকুই এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্বপাড়া অঞ্চলে তিনটি পরিবার, চ্যাটার্জী, মুখার্জী ও রায় পরিবারের যৌথ উদ্যোগে সাড়ম্বরে পালন করা হয়। এবছর এই পুজোটি ৫৫ বছরে পা দিল, যা শুধু এই অঞ্চলে নয়, সারা এলাকায় জগদ্ধাত্রী পূজার এক বিশেষ দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।
এই পূজার বিশেষ বৈশিষ্ট্য
এই পূজা শুধুমাত্র এক দিনেই সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী এবং দশমীর পূজার সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়, যা এই পূজাকে আরও বিশেষ করে তুলেছে। একদিনে এই চারটি পুজোর আয়োজন মানুষকে আকর্ষণ করে এবং মনের মধ্যে এক গভীর আবেগের সঞ্চার ঘটায়। দূরদূরান্ত থেকে মানুষজন এই পূজা দেখতে ভিড় করেন, যা প্রত্যেক বছর একটি বড় উৎসবে পরিণত হয়। জগদ্ধাত্রী পূজার এই তিন দিনব্যাপী উৎসবকে ঘিরে থাকে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও যাত্রাপালা। পূজার দিনে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যেখানে এলাকার মানুষজন নিজেদের প্রতিভা প্রদর্শনের সুযোগ পান। এই অনুষ্ঠানগুলোতেও এলাকার মানুষজন ও দর্শনার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন, যা একে আরও জীবন্ত করে তোলে।
বিসর্জনের দিন বাদ্যযন্ত্র সহকারে দেবী প্রতিমা নিরঞ্জনের মাধ্যমে পূজার পরিসমাপ্তি হয়। সেই দিনটি এলাকায় বিশেষ উৎসবের আবহ তৈরি করে এবং সকলেই সেই মুহূর্ত উপভোগ করেন। পূজার এই সম্পূর্ণ আয়োজনটি এলাকায় সকলের মধ্যে এক সুন্দর ও গভীর সংযোগ গড়ে তোলে। এইরকম ঐতিহ্যবাহী ও সাড়ম্বরে উদযাপিত জগদ্ধাত্রী পূজা শুধু পূজা নয়, এটি হলো এলাকার মানুষের জন্য একটি আবেগের উৎসব।